2.1.10

প্যাঁচা

প্যাঁচা, পেঁচা, বা পেচক এক প্রকার নিশাচর শিকারী পাখি। স্ট্রিজিফর্মেস বর্গভূক্ত এই পাখিটির এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০০টি প্রজাতি টিকে আছে। বেশীরভাগ প্যাঁচা ছোট ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণি যেমন ইঁদুর এবং কীটপতঙ্গ শিকার করে, তবে কিছু প্রজাতি মাছও ধরে। প্যাঁচা উপর থেকে ছোঁ মেরে শিকার ধরতে অভ্যস্ত। শিকার করা ও শিকার ধরে রাখতে এরা বাঁকানো ঠোঁট বা চঞ্চু এবং নখর ব্যবহার করে। কুমেরু, গ্রীণল্যান্ড এবং কিছু নিঃসঙ্গ দ্বীপ ছাড়া পৃথিবীর সব স্থানেই প্যাঁচা দেখা যায়। বাংলাদেশে ১৭টি প্রজাতির প্যাঁচা পাওয়া যায় যার মধ্যে ২৫টি স্থায়ী এবং ২টি পরিযায়ী আর সারা এশিয়াতে আছে ৯৩ প্রজাতি।
প্যাঁচা মূলত নিঃসঙ্গচর। এরা গাছের কোটর, পাহাড় বা পাথরের গর্ত বা পরনো দালানে থাকে। প্যাঁচার অদ্ভূত রকমের ডাক এবং নিশাচর স্বভাব একে নানা কুসংস্কার এবং অলৌকিক চিন্তার সাথে যুক্ত করেছে। কিন্তু মজার ব্যাপারটি হলো এমন ডাক কিন্তু দুটো পেঁচা মিলে ডাকে।
অধিকাংশই রাতের বেলা বের হয় শিকারের জন্য। আগে আমাদের দেশে গ্রামাঞ্চলে প্রচুর হুতোম পেঁচা দেখা যেত। এখনও খুঁজলে দেখা ২ -১ টা পাওয়া যাবে। পেঁচাদের দৈহিক বৈশিষ্ট্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো ওদের বড় বড় গোল দুটো চোখ। একদম যেন গাড়ির সাদা হেড লাইট। চোখদুটো পেঁচার এতোই বড় যে অক্ষিগোলকের মধ্যেও সেগুলো ঢোকেনা। মাথা ঘুরিয়ে এরা প্রায় পুরোপুরি পেছনের দিকে তাকাতে পারে। একারণেই এক জায়গায় চুপটি করে বসেই ওরা চারদিকে নজর রাখতে পারে। 


দিনের আলো এই বড় বড় চোখের পেঁচা সইতে পারে না, একারণই বেচারা পেঁচা রাতের পাখি খেতাব পেয়ে গেল। চাকতির মতো ওদের মুখমন্ডলের সুবিধা হলো এর ফলে খুব সূক্ষ্ম শব্দের প্রতিধ্বনিও হয় এদের কানে। পেঁচার শ্রবণ শক্তি কিন্তু দুর্দান্ত। অন্ধকারে খসখস নড়াচড়ার শব্দ শুনেই সে বুঝে ফেলতে করতে পারে শিকারের অবস্থান।

পেঁচা এক মারাত্মক শিকারী পাখি। বেশির ভাগ পেঁচারই লম্বা ও ধারালো নখর আছে। পাখা দুটো বেশি না দুলিয়েই এরা উড়তে পারে, এবং সে কারণেই শব্দ না করে খোলা বাতাসে পাক খেতে পারে অনায়াসে। একবার যখন তার শিকারকে খুঁজে পায় অমনি সে বাঁকানো নখড়ের থাবা নিয়ে নেমে আসে শিকার ধরতে। ওদের খাবারে তেমন কোন বাছবিচার নেই।
সংগ্রহ: উইকি পিডিয়া থেকে ও বিডি নিউজ24 থেকে।

0 comments:

Post a Comment