2.1.10
বাদুর
পা দিয়ে গাছের ডালে আটকে মাথা নিচের দিকে ঝুলিয়ে দিনের বেলা ঘুমিয়ে থাকে বাদুড়। গাঢ় আধারে ইকোলোকেশন ব্যবহার করে এরা যে কোন জিনিষের অস্তিত্ব টের পায়। লক্ষ্য বস্তুর দিকে তীক্ষ্ণ শব্দ ছুড়ে দিয়ে ওরা সেটার অবস্থান চিহ্নিত করতে পারে। তাই অন্ধকারে চলাফেরা করতে মোটেও অসুবিধা হয় না।দিনের আলো বাদুড় সহ্য করতে পারে না। তাই এ সময়টা ওরা পুরনো ভাঙা বাড়িতে, বনের ভেতর গাছের ডালে ঝুলে থেকে বিশ্রাম নেয়। রাত হলেই ওরা চলে যায় খাবার খুঁজতে। এদের খাবার তালিকায় আছে বিভিন্ন ফলমুল (আম, লিচু, কলা ইত্যাদি)। একটি বাদামী বাদুর ঘন্টায় প্রায় ৬০০ মশা ধরতে পারে ।
এসব নিরীহ বাদুর ছাড়াও আরও আছে রক্তচোষা বাদুড় বা ভ্যাম্পায়ার বাদুড়। এই ভ্যাম্পায়ার বাদুরদের পেট ভরাতে চাই তাজা রক্ত। এরা শিকারের চামড়ায় নিজের তীক্ষ্ণ ধারালো দাঁত দিয়ে চিড়ে রক্ত নালীতে ফুটো করে ফেলে। তারপর শক্ত জিভ দিয়ে রক্ত টেনে নিয়ে পেট ভরায়। খাবারের খোঁজে এরা মাটির খুব কাছ দিয়ে উড়ে বেড়াতে পারে। উড়তে উড়তে একসময় শিকারের কাছে নেমে পড়ে, পেছনের পা ও লম্বা থাবা লুকিয়ে রাখে চার পায়ে লাগানো পাখার আড়লে। সাধারণ ভ্যাম্পায়াররা গবাদি পশু কিম্বা ঘোড়াকে আক্রমণ করে' কিছু ভ্যাম্পায়ার আছে যারা পাখিদেরও আক্রমণ করে। শিকারের রক্ত যাতে দ্রুত জমে না যায় সেজন্যে ওরা মুখ থেকে লালার সাথে এক ধরণের রাসায়নিক পদার্থ ঢুকিয়ে দেয় শিকারের শরীরে। প্রতিদিন এদের ২০ গ্রাম রক্ত দরকার হয়, অর্থাৎ প্রায় দুই টেবিল চা চামচের সমান। অনেক সময় আবার রক্ত খেয়ে এমন ঢাপ্পুস লেগে যায় যে তখন উড়তেও কষ্ট হয়।
আমাদের দেশের বাদুরগুলো রাতে জাগলেও ভ্যাম্পায়ারদের মতো ভয়ঙ্কর নয়। ভ্যাম্পায়ার বাদুরদের কেবল মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকাতেই দেখা যায়। সেখানে এদেরকে ক্ষতিকারক প্রাণী হিসেবেই দেখা হয় কারণ ভ্যাম্পায়ার বাদুররা র্যাবিস (rabies) বা হাইপোকন্ড্রিয়া নামের মরণব্যাধি ছড়ায়।
আবার গুহায় বসবাসকারী বাদুর ২৪ ঘন্টা মধ্যে ১৯ ঘন্টাই ঘুমিয়ে কাটায়।বাদুরের বৈজ্গানিক নাম Pipistrellus Pipistrellus আর ইংরেজী নাম Bat।
বাদুর সম্পর্কিত সব চেয়ে মজার তথ্য হল এই যে,এরা মুখ দিয়ে খায় এবং মুখ দিয়েই পরিপাক কার্য চালায়।
0 comments:
Post a Comment