30.6.16
তামাপিঠ লাটোরা
বাহারি রঙের পালকে সজ্জিত এক সুন্দর পাখি তামাপিঠ লাটোরা।
আবাদি জমির কাছে গাছের ডালে বা বাঁশের খুঁটির ওপর বসে পাখিটি মাটির দিকে
নজর রাখে পোকামাকড় ধরার জন্য। চোখের দৃষ্টি কোনো পতঙ্গের দিকে পড়লে
উড়ে গিয়ে তা ধরে ফেলে। সকাল থেকে সূর্য ডোবার আগ পর্যন্ত শিকার ধরে খায়।
স্বজাতের অন্য প্রজাতির বিচরণ এলাকায় যায় না। নিজের বিচরণ এলাকায়
স্বপ্রজাতির পাখি এলে উচ্চ স্বরে ডেকে তাড়িয়ে দেয়। এ পাখি স্থির হয়ে এক
জায়গায় অনেকক্ষণ বসে থাকে। তবে শিকার চোখে পড়লে দ্রুত উড়ে গিয়ে ধরে।
কোনো বিপদের আঁচ পেলে উড়ে গিয়ে নিরাপদ জায়গায় বা গাছের উঁচু ডালে বসে।
তামাপিঠ লাটোরা সাধারণত আবাদি জমি, বনের ধারে খোলা মাঠ, ছোট ঝোপ ও সবজি
বাগানে উড়ে বেড়ায়। সাধারণত বসে থাকা স্থান থেকে উড়ে গিয়ে মাটিতে
ঝাঁপিয়ে পড়ে পোকা ধরে। শীতের সময় একই স্থানে দিনের পর দিন বিচরণ ও শিকার
করে।
তামাপিঠ লাটোরা বাদামি চোখ ও কপালে কালো পট্টিওয়ালা পোকা
শিকারি পাখি। দেহের দৈর্ঘ্য ১৮ সেন্টিমিটার, ওজন ২০ গ্রাম। প্রাপ্তবয়স্ক
পাখির পিঠ কালো, সাদা ও মেরুন রঙে বৈচিত্র্যময়। দেহের নিচের দিক সাদা।
কালো লেজের আগা ও পাশ সাদা। মাথার চাঁদি ও ঘাড়ের পেছনের অংশ ফিকে ধূসর।
কাঁধের পালক গাঢ় মেরুন। কোমর ও গলার পালক সাদাটে। মেয়ে পাখির মাথার
চাঁদিও কালো ফিতা সরু। চোখ বাদামি, ঠোঁট কালচে বাদামি। খাদ্যতালিকায়
রয়েছে পঙ্গপাল, ঝিঁঝি পোকা, ফড়িং, টিকটিকি, ছোট ইঁদুর ইত্যাদি। তামাপিঠ
লাটোরার বৈজ্ঞানিক নাম lanius vittatus। ইংরেজি নাম Bay-backed Shrike।
বাংলাদেশ বাদে ভারত, নেপাল, ভুটান, ইরান, তুরস্ক ও পাকিস্তানে এ প্রজাতির
পাখি দেখা যায়। এটি বিশ্বে বিপদমুক্ত (বিপন্ন নয়) পাখি বলে বিবেচিত। এটি
পরিযায়ী পাখি। তবে নিয়মিত বাংলাদেশে আসে না।