31.10.12

হুদ হুদ পাখি

'হুদ হুদ' নামে ডাকে গ্রামের মানুষ, অনেকে আবার 'কাঠকুড়ালি'ও ডাকে। এর বৈজ্ঞানিক নাম উপুপা এপপস্ (Upupa epops). এটি 'উপুপিদি' গোত্রের অন্তর্ভুক্ত একবটি পাখি। 



কাঠকুড়ালি বা বটবটিক'র শরীরের পালক বিস্কুট রঙের, লেজ এবং ডানায় রয়েছে সাদাকালো ডোরা দাগ। ঠোঁট কালচে লম্বা, তবে সামান্য বাঁকানো। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। মাথার ঝুঁটিটি রাজকীয় মুকুটের মতো দেখায়। রেগে গেলে কিংবা খোশ মেজাজে থাকলে মুকুটটি বেশ প্রসারিত করে। তখন পাখিটিকে অদ্ভুত সুন্দর দেখায়। অনেকটাই রাজরাজরাদের মুকুটের মতো মনে হয়। ওর মুকুটসদৃশ ঝুঁটি দেখে অনেকে এটিকে কাঠঠোকরা বলে ভুল করে। এর ডাক বেশ মধুর।
হু..পো হু..পো সুরে একনাগাড়ে ডাকতে থাকে। অনেক দূর থেকে ডাক শুনতে পাওয়া যায়। মোহনচূড়া মাঠের পাখি, গভীর ঝোপ-জঙ্গল এদের পছন্দ নয়। পারতপক্ষে এরা বনবাদাড়ে খুব একটা ঘেঁষতে চায় না। সারা দিন ঘাসভর্তি মাঠে-ময়দানে একা পড়ে থাকতে পছন্দ করে। কালেভদ্রে স্ত্রী-পুরুষ পাখিকে একত্রে দেখা যায়। সব ধরনের পোকামাকড়ই এদের খাবার তালিকায় থাকে। লম্বা ঠোঁট গর্তে ঢুকিয়ে এরা সহজে পোকামাকড় বের করে আনে।

মোহনচূড়ার প্রজননকাল মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত। বাসা বানায় নির্জন স্থানের পুরনো দেয়ালে কিংবা গাছ বা মাটির গর্তে। ডিম পাড়ে চার-পাঁচটি। ডিমে তা দেয় শুধু স্ত্রী পাখিই। ওই সময় পুরুষ পাখি স্ত্রীর খাবারের দায়িত্ব পালন করে। প্রায় ১৮ থেকে ২০ দিন তা দেওয়ার পর ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়।


লিখেছেন: পার্থ সারথী রায়

0 comments:

Post a Comment