6.5.12
তিলা মুনিয়া
তিলা মুনিয়া (Scaly-breasted Munia)। বৈজ্ঞানিক নাম Lonchura punctulata.। এ দেশের শহর-বন্দর-গ্রামে প্রচুর দেখা যায়। লম্বায় ১১.৫ সেন্টিমিটার। মাথা থেকে লেজের ডগা জলপাই-বাদামি। চিবুক গাঢ় রঙের। বুকের ওপরটা খয়েরি। পেট কালচে-বাদামি, তাতে সাদা ফোঁটা থাকে। স্ত্রী-পুরুষ একই রকম। মুনিয়া বেশ চঞ্চল।ফসলের খেত, মাঠ, নলখাগড়ার বন, বাগান প্রভৃতি স্থানে ঝাঁকে ঝাঁকে চড়ে বেড়ায়। এদের ঠোঁট খাটো ও বেশ শক্ত। ধান বা অন্যান্য শস্যদানা মুখে রেখেই তা থেকে শক্ত খোসা ছাড়িয়ে নিতে পারে। ঘাসবীচি ও কীটপতঙ্গও খায়। মে-সেপ্টেম্বর প্রজননকাল। খেজুরগাছের পাতার আড়ালে, লতার ঝোপে, বাবলা, ঝাউ, কেয়া, কান্তা, দেবদারু প্রভৃতি গাছে গোলাকৃতির বাসা বোনে। ঘাস-লতা-ধানের পাতা দিয়ে সুন্দর, নরম ও তুলট বাসাটির ভিত্তি রচনা করে। কাশফুল দিয়ে চারপাশটা মুড়ে নেয়। বাসার ভেতরে থাকে কাশফুলের গদি। বাসায় ঢোকার জন্য গোপন সরু পথ বানায়, যেন শত্রুরা না দেখে। বশেমুরকৃবিতে বিল্ডিংয়ের কার্নিশের নিচে ও টোনারের খালি কার্টনে বাসা বানাতে দেখেছি। স্ত্রী মুনিয়া চার থেকে আটটি ধবধবে সাদা ডিম পাড়ে। স্বামী-স্ত্রী মিলে ১৩ থেকে ১৫ দিন তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায়।
শহুরে মানুষের কাছে পোষা পাখি হিসেবে মুনিয়া বেশ জনপ্রিয়। খাঁচাবন্দী মুনিয়া রাস্তাঘাট ও ‘পটশপে’ দেদার বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিক্রেতারা এদের গায়ে নীল, হলুদ, সবুজ বা উজ্জ্বল রং লাগিয়ে দেয়, যা গোসল করালেই উঠে যায়। গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে এদের জাল দিয়ে ধরে টঙ্গী, ঢাকার কাঁটাবন ও অন্যান্য স্থানে বিক্রি করা হয়। ফলে একদিন হয়ত সহজলভ্য এই পাখিগুলো হারিয়ে যাবে।
আ ন ম আমিনুর রহমান
ছবিস্বত্ত্বঃ পার্থ সারথী রায় ও অন্তর্জাল
0 comments:
Post a Comment