18.4.12
কণ্ঠি ঘুঘু
কণ্ঠি ঘুঘু (Eurasian Collared Dove) 'নোদাঘুঘু' নামেও পরিচিত। বৈজ্ঞানিক নাম Streptopelia decocto। রাজঘুঘুর দুটো জানা উপপ্রজাতির মধ্যে এ দেশে Streptopelia decocto decocto উপপ্রজাতিটিই দেখা যায়।
রাজঘুঘু দেখতে কিছুটা স্ত্রী ‘লালঘুঘু’র মতো। তবে রংটা আরও হালকা এবং আকারে বেশ বড়। লম্বা ৩২ সেন্টিমিটার, ওজন ১৩৫ গ্রাম। দেহের ওপরের অংশ বালু-বাদামি ও নিচের অংশ হালকা গোলাপি-ধূসর। ঘাড়ে অর্ধচন্দ্রাকৃতির একটা কলার থাকে। পেট ও তলপেট ছাই-ধূসর। ডানার পেছনের পালক কালচে ও নিচটা সাদা। লেজের তলার আচ্ছাদক পালক গাঢ় ধূসর। কালচে লেজের শেষ অংশে সাদা পট্টি। ঠোঁট বাদামি-কালো। পা ও আঙুল গাঢ় গোলাপি। নখ কালো। পুরুষ ও স্ত্রী দেখতে একই রকম। বাচ্চাগুলোর পালকে হলদে আভা থাকে। ঘাড়ে কোনো কলার নেই।
খোলা মাঠ, গ্রাম বা আশপাশে বড় গাছ আছে এমন কৃষিজমি, শুষ্ক পাতাঝরা বনের প্রান্ত ও লবণাক্ত (Mangrove) বনে এদের দেখা যায়। সাধারণত একাকী, জোড়ায় বা ছোট দলে বিচরণ করে। চষা জমি, ঘেসো মাঠ বা বনের প্রান্তে হেঁটে হেঁটে আগাছার বীচি ও শস্যদানা খায়।
ফেব্রুয়ারি থেকে মে প্রজননকাল হলেও সারা বছরই এরা প্রজনন করতে পারে। প্রধানত ছোট আকারের গাছ ও ঝোপঝাড়ে কাঠিকুঠি দিয়ে অন্যান্য ঘুঘুর মতোই বাসা বানায়। স্ত্রী রাজঘুঘু তাতে দু-তিনটি সাদা ডিম পাড়ে। ডিম ফোটে মাত্র তেরো দিনে।
দেখতে বেশ সুন্দর হওয়ায় এরা পোষা পাখির ব্যবসায়ীদের নজরে পড়েছে। এমনিতেই বর্তমানে এদের সংখ্যা বেশ কমে গেছে। যৎসামান্য যা-ই আছে, তা-ও আবার ঘুঘু শিকারিদের কবলে পড়ে বিভিন্ন পোষা পাখির দোকানে, বিশেষ করে ঢাকার কাঁটাবনে, চলে আসে। কাজেই রাজঘুঘু রক্ষা করা উচিত।
কণ্ঠি ঘুঘু
আ ন ম আমিনুর রহমান, প্রথম আলো
0 comments:
Post a Comment