7.1.11
কোটরে পেঁচা
কোটরে পেঁচা। কোটরের ভেতর থাকে বলেই এমন নামকরণ। এদের বৈশিষ্ট্য হলো—দুটো পেঁচা একসঙ্গে থাকে। জোড়া ছাড়া একা চলে না। লোকবসতির আশপাশেই এদের বিচরণ। শহুরে পরিবেশ কিংবা পাহাড়ি অঞ্চলেও দেখা মেলে এদের। আকারে ছোট বলে গাছের কোটর, নগরের কোনো স্থাপনার ভেতর কোনো গর্ত পেলে এরা বাসা বাঁধে। তবে গাছপালা যেভাবে কমে যাচ্ছে, তাতে এদের বসবাসের জন্য দালানকোঠাই বেশি নিরাপদ মনে হচ্ছে। বাংলা একাডেমীর নজরুল মঞ্চের বিশাল বটগাছ কিংবা রমনা পার্কের প্রাচীন মহুয়া গাছে সূর্যাস্তের পর এদের দেখা মেলে।কোটরে পেঁচার ইংরেজি নাম ‘স্পটেড আউলেট’ (Spotted owlet)। বৈজ্ঞানিক নাম Athene brama indica। আবাস মূলত এশিয়ার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে। ঠিকঠাকভাবে বললে, ভারত থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া পর্যন্ত। কোটরে পেঁচা সম্পর্কে উইকিপিডিয়ায় আছে—এই প্রজাতির আকার, রং এবং চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও বেশ বৈচিত্র্যময়। কোটরে পেঁচার শরীরের উপরিভাগ ধূসর-বাদামি, তার মধ্যে অসংখ্য বিন্দুর মতো সাদা দাগ। নিচের অংশে সাদার মধ্যে বাদামি রঙের লম্বা ডোরা। শরীরের তুলনায় মুখ ছোট। চোখের মণি হলুদ। মালার মতো সাদা রঙের বন্ধনীও আছে ওদের গলায়। স্ত্রী-পুরুষ উভয়ের রং একই রকম। এদের শরীরের মাপ ১৮ থেকে ২১ সেন্টিমিটার।
কোটরে পেঁচা নিশাচর। এদের শিকারের তালিকায় আছে বিভিন্ন ধরনের পতঙ্গ এবং ছোট ছোট মেরুদণ্ডী প্রাণী। কণ্ঠস্বর কর্কশ। সূর্য ডোবার খানিক পরেই এরা হেঁড়ে গলায় চিরর চিরর চিরর করে ডেকে ওঠে। এদের প্রজনন মৌসুম নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত। প্রজনন মৌসুমে ছোট মাথা এবং চকচকে লেজ দেখে স্ত্রী পেঁচাকে চেনা যায়। এদের বাসা বাঁধার উপাদানগুলোর মধ্যে থাকে শুকনো পাতা, পালক ও খড়কুটো। একসঙ্গে তিন থেকে চারটি ডিম দেয় কোটরে পেঁচা। গোলাকার ডিমগুলো হয় সাদা রঙের। তিন-চারটি ছানার মধ্যে একটি কিংবা দুটি ছানাই কেবল উড়তে পারে শেষ পর্যন্ত!
সাহাদাত পারভেজ |প্রথম আলো
1 comments:
খুব আগ্রহ নিয়ে সার্চ দিয়েছিলাম পেঁচা লিখে, মনে হয় ঠিক জায়গায়ই এসেছি। অনেক জ্ঞানার্জন হল, ধন্যবাদ।
April 28, 2012 at 12:39 PMPost a Comment