9.1.10

শ্বেত সরালী

শীতের শুরুতেই আমাদের দেশের বড় বড় নিরাপদ জলাশয়গুলোতে সরালীর পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে। বাংলাদেশে সাধারণত দু’ধরণের সরালী দেখা যায়। ছোট সরালী ও বড় সরালী। এদের মধ্যে ছোট সরালীই আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশী দেখা যায়। সরালীকেই আমাদের দেশের বেশীরভাগ লোক অতিথি পাখি হিসেবে ভুল করে। আমাদের মিডিয়াগুলো ফলাওভাবে অথিতি পাখি হিসেবে প্রচার করে। আসলে সরালী অতিথি পাখি নয়। এরা একেবারেই আমাদের দেশীয় পাখি। শীতকালে এরা কলোনি বেঁধে থাকে। একসঙ্গে খাবারের সন্ধানে এরা সন্ধ্যায় বেরিয়ে পড়ে। আবার ভোর হতে না হতেই ফিরে আসে শিস দিতে দিতে। এদের প্রিয় খাবারের তালিকায় থাকে উদ্ভিদের কচি ডগা, ফলমূল, শ্যাওলা, শামুক, ছোট মাছ ও ব্যাঙ। বর্ষাকালে এরা জোড়ায় জোড়ায় থাকে। কারণ এসময় এদের বাসা বানাবার সময়। শীতকালে মিরপুর চিড়িয়াখানা, জাবি ক্যাম্পাস, বঙ্গভবন পুকুর, বিএলআরএ, মুন্সিগঞ্জের ইন্দ্রকপুর, দেশের বিভিন্ন বিল, হাওড়-বাওড়, নদী-নালা, খালে এদের ঝাঁকে ঝাঁকে দল বেঁধে থাকতে দেখা যায়। ছোটখাটো ধরণের এ পাখিটি লম্বায় প্রায় ৪০সেমির মত। সরালীর মত ছোট বাদামী রঙের হাঁস আমাদের দেশে নেই বললেই চলে। লেজের উপরিভাগের পালকগুলো চেস্টনাট, মাথার টুপিটি গাঢ় বাদামী। পা ও ঠোঁট কালো। সরালী ৭-১০টি ডিম পাড়ে। ডিমের রঙ সাদা। তবে ডিমে তা দেওয়ার পর ফ্যাকাসে বাদামি রঙ ধারণ করে। গত ক’বছর ধরে দু’একটি সরালীর জোড়া জাবি ক্যাম্পাসে বাচ্চা ফোটাচ্ছে। শ্বেত বা অ্যালবিনো সরালী দেখা খুবই বিরল একটা ঘটনা।


এদের ইংরেজী নাম Lesser Whistling Teal ও দ্বীপদি নাম Dendrocygna javanica।

0 comments:

Post a Comment