16.12.09
পানিকাটা বা গাঙচষা
পানিকাটা বা গাঙচষা কমলা ও হলুদ রঙের লম্বা আকর্ষণীয় ঠোঁটের Rynchopidae পরিবারের পাখি। বিশেষত চর এবং বালুচরই এদের আবাস ভূমি এবং সেখানেই প্রজনন হয়।বালিতে ডিম পাড়ে এরা। এ স্বভাবই তাদের বংশবিস্তারের জন্য কাল হয়েছে। চর এলাকায় মানুষ বসতি স্থাপন শুরু করেছে। সঙ্গে গরু-মহিষ। এদের উৎপাতে পানিকাটার ডিম ও বাচ্চা ব্যাপক হারে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাড়ছে তাদের বিলুপ্তির আশঙ্কা।
একসময় হাতিয়া'র জনমানবহীন চর বাহাউদ্দিন (দমারচর) এদের বেশ দেখা মিলত। কিন্তু সেখানে আগের মতো ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা যায় না এদের। কুয়ালালামপুরভিত্তিক এশীয় জলচর পাখি শুমারি সংস্থার জরিপ অনুযায়ী, বর্তমানে এ চরে দুই থেকে আড়াই হাজার পানিকাটা আছে। অথচ তিন-চার বছর আগে এ সংখ্যা ছিল সাত হাজারের মতো। চর বাহাউদ্দিন ছাড়া দেশের আর কোথাও এখন পর্যন্ত ইন্ডিয়ান স্কিমার বা পানিকাটা তেমনভাবে দেখা যায় না বলে তিনি জানান।
পানিকাটা লম্বায় ৪০ থেকে ৪৩ সেন্টিমিটার। ডানা দীর্ঘাকৃতির।প্রসারিত ডানাসহ আকার ১০৮ সেমি। ওপরের অংশ কালো, প্রান্ত সাদাটে। কপালসহ নিচের অংশ সাদা। ঝুঁটির ওপর কালো বড় টিপ। লম্বা দুই পা লাল রঙের। ডানার গঠন অনেকটা অ্যালব্যাট্রসের মতো। বড় ডানায় ভর করে পানি ও বালুময় বিচরণক্ষেত্রে প্রায় সারা দিন উড়ে বেড়ায়। ডানার তুলনায় শরীর ছোট। ঠোঁটটি চিকন লম্বাটে, উজ্জ্বল কমলা রঙের। ঠোঁটের ডগা হলুদ। লাঙলের ফলার মতো ওপরের চেয়ে নিচের ঠোঁট লম্বা। উড়ন্ত অবস্থায় নিচের চোয়াল পানিতে ডুবিয়ে মাছ শিকারে তারা পারঙ্গম। একটি বিশেষ ধরনের পাতলা মাছ পানিকাটার খাদ্য। শুধু দিনে নয়, চাঁদের আলোয়ও পাখিটি মাছ শিকার করে। কখনো উড়ন্ত অবস্থায়, কখনোবা বালুচরে নেমে তা গিলে ফেলে।
ফেব্রুয়ারি থেকে মে-জুন পর্যন্ত পানিকাটার ডিম পাড়ার সময়।চরে বসে ডিমে তা দেয় পানিকাটা। তিন সপ্তাহের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। তিন-চারটি ডিম থেকে বড়জোর একটি বাচ্চা বাঁচে।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন), বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত রেড ডেটা বুক-এর তথ্যানুযায়ী, পানিকাটা বিশ্বব্যাপী একটি বিপন্ন পাখি। এশীয় জলচর পাখি শুমারি সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশেই বর্তমানে এ পাখির সংখ্যা সর্বোচ্চ। এ ছাড়া ভারত, পাকিস্তান ও মিয়ানমারের নির্দিষ্ট কিছু স্থানে এ পাখিটি দেখা যায়।
এর ইংরেজি নাম Skimmer এবং বৈজ্ঞানিক নাম Rynchopidae Rynchops.
এই গাঙচষা'র বেশ কিছু জাত দৃশ্যতঃ যেমন_
0 comments:
Post a Comment